রূপলাল
-মানিক দাক্ষিত
পরপর দু’বছর ফেল মেরে রূপলাল,
পড়া ছেড়ে ঝাণ্ডা ধরে ঝাড়ে শুধু বোলচাল।
কান ধরে চড় মেরে বলে বাবা রূপকে,
“বাড়ী ছেড়ে কেটে পড়ে ধান্ধা করো টাকাতে।
সর্বনেশে ঘাড়ে বসে গিলবে তুমি কতকাল,
বলছি তোরে ঝরঝরে ইহকাল পরকাল।
জারিজুরি গুণ্ডাগিরি চলবে নাকো বেশীদিন,
সব ফেলে যাবি জেলে চুকবে যত আছে ঋণ।
লেখাপড়া করে যারা পায় তারা কতো মান,
গাড়ি-বাড়ী টাকা-কড়ি সবার কাছে সুসন্তান।
নাই টাকা সব ফাঁকা বৃথা হবে জারিজুরি,
ভগ্নদশা সব আশা কেরামতি বাহাদুরি।”
রূপলাল ঠুকে তাল বলে পূজ্য বাবাকে,
“জিও জিও দেখে নিও ক’দিন বাদে আমাকে!
নাই নীতি রাজনীতি করি আমি বাজারে,
এই ধন মূলধন পাবে নাকো হাজারে।
বিদ্যে ডিগ্রি টাকাকড়ি লাগে নাকো ইহাতে,
হলে নেতা জাতে ওঠা সবার আমি মাথাতে।
মান-খ্যাতি প্রতিপত্তি এসে যাবে দূয়ারে,
আমি বেটা কেউকেটা ভাসবো সুখ জোয়ারে।
হাতে ঝাণ্ডা সব ঠাণ্ডা চালিয়ে যাবো দাদাগিরি,
খাপে খাপে ধাপে ধাপে উঠে যাবো শেষ সিঁড়ি।”
শর্ত মানি কথাখানি রূপলাল রেখেছেন,
ছলে বলে কৌশলে মস্ত নেতা বনেছেন।
এখন?
রূপলাল গোলগাল গণ্যি-মান্যি ভদ্দরলোক,
গাড়ি-বাড়ী টাকা-কড়ি লক্ষ্য রাখে লক্ষ চোখ।